তারিক রমাদান

তারিক রমাদান একজন সুইস শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং লেখক। তারিক রমাদান ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসের টাইম ম্যাগাজিনের জরীপ অনুযায়ী একুশ শতকে পৃথিবীর সেরা ১০০ জন বিজ্ঞানী এবং চিন্তাবিদদের মধ্যে অন্যতম। তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ‘ফ্যাকাল্টি অফ অরিয়েন্টাল স্টাডিস’ এর ‘কন্টেমপরারি ইসলামিক স্টাডিস’ বিভাগের অধ্যাপক। এছাড়াও তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব বিভাগে অধ্যাপনা করেন। তিনি কাতার বিশ্ববিদ্যালয় এবং মালোয়েশিয়া পেরিলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের ভিসিটিং প্রফেসর। তিনি জাপানের দোশিশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এবং কাতারের দোহায় অবস্থিত রিসার্চ সেন্টার অফ ইসলামিক লেজিসলেশন অ্যান্ড এথিক্স’ এর ডিরেক্টর। তিনি চিন্তা-গবেষণা বা ইজতিহাদের মাধ্যমে মুসলিম জীবনের সমস্যাগুলোর নতুন সমাধান এর জন্য সামাজিক বিজ্ঞান এবং ইসলামি ফিকাহ শাস্ত্রের মূলনীতি বা উসূল আল ফিকহ এর একটি নতুন সেতুবন্ধন তৈরীতে একটি পূনর্গঠনমূলক সংস্কারের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ত্রিশটির বেশি বই লিখেছেন এবং সারা পৃথিবীর অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা করেছেন।

তারিক রমাদান জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন এবং ফরাসি সাহিত্যে স্নাতোকোত্তর (এম এ) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ‘আররী ও ইসলাম শিক্ষা’-এ ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।

প্রফেসর রমাদান কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে ক্লাসিক ইসলামী শিক্ষাদান পদ্ধতিতে অর্থাৎ গুরু-শিষ্য (ওয়ান-অন-ওয়ান) নিয়মে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন (৭টি বিষয়ে ইজাজাহ্‌)। যে শিক্ষা সমাপন করতে গড়ে ৬-৭ বছর লাগে, তারিক রমাদান অসাধারণ নৈপুণ্য আর দক্ষতার মাধ্যমে তা ২ বছরে (১৯৯২-৯৩) সম্পন্ন করেছিলেন। তাঁর পাঠদান শেষে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকার তাকে ইসলামী উসূল আল ফিকহ এর অনেকগুলো শাখায় সনদ (ইযাযাত) দান করেন। একটা সাক্ষাৎকারে তারিক রমাদান বলেছিলেন যে, তিনি আল-আজহারের দিনগুলোতে তিনি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত লাগাতার পড়াশোনা করতেন।

তারিক রমাদান তাঁর লেখালেখি ও বক্তৃতার মাধ্যমে প্রাশ্চাত্যে মুসলমানদের বিষয়ে অনেক তর্কের অবসানের ক্ষেত্রে ও মুসলমান বিশ্বে ইসলামের পুনর্জাগরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বিশ্বব্যাপি, একাডেমিক ও সাধারণ পর্যায়ে, ধর্মতত্ত্ব, নীতিশাস্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার, পরিবেশ ও আন্তঃবিশ্বাস এবং সেইসাথে আন্তঃসাংস্কৃতিক বিষয়ে ব্যপকভাবে বক্তৃতা প্রদান করে থাকেন।

তি্নি ইউরোপের ব্রাসেলস এ অবস্থিত মুসলমানদের থিঙ্কট্যাংক “ইউরোপীয়ান মুসলিম নেটওয়ার্ক” এর সভাপতি। তিনি “ইন্টারন্যশনাল ইউনিয়ন অফ মুসলিম স্কলারস” এরও একজন সদস্য।

তাঁর উল্লেখযোগ্য বইসমূহ হলোঃ “Islam and the Arab Awakening”, (2012); “The Arab Awakening: Islam and the New Middle East”, (April 2012); “The Quest for Meaning, Developing a Philosophy of Pluralism”, (2010); “What I believe”, (2009); “Radical Reform, Islamic Ethics and Liberation”, (2008) প্রভৃতি।