ব্যক্তিগত অধ্যয়ন বা পাঠচক্রের জন্য কুরআনের অনুচ্ছেদসমূহের পাঠক্রমের ধারণা দেয়া একটি খুবই কঠিন কাজ। প্রথমতঃ কি সংযোজন করতে হবে? সমগ্র কুরআন শরীফ থেকে একটি পর্যাপ্ত এবং সন্তোষজনক বাছাই প্রায় অসম্ভব। কুরআনের প্রতিটি অংশে অতিরিক্ত এবং নতুন কিছু না কিছু বক্তব্য রয়েছে। এমনকি বারবার পুনরাবৃত্তি এবং একই ধরনের অনুচ্ছেদসমূহেরও আলাদা কিছু অন্তর্নিহিত ভাবধারা আছে। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক অনুচ্ছেদ কেবল নির্দিষ্ট সংখ্যক ভাবধারাই সংযোজন করতে পারে। অতএব প্রত্যেক সিলেবাসেই অনেক কিছু সমান বা অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বাদ পড়ে যাবার ত্রুটি থেকে যাবে। উপরন্তু যে কোন নির্ধারিত এপ্রোচ বিধি বহির্ভূত হবে। কুরআনে নয় বরং শুধু বাছাইকারীর ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ও পছন্দ অপছন্দের প্রকাশ ঘটবে বা ঘটাই স্বাভাবিক। এখানে যে পাঠক্রম দেয়া হলো, তা ব্যবহারের সময় এ সীমাবদ্ধতাগুলোর কথা স্মরণ রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে আপনাকে সজাগ থাকতে হবে যে, যা বাদ রাখা হয়েছে, তাও সমান মূল্যবান এবং আমি একজন সাধারণ মানুষ, যিনি ভুল ত্রুটির ঊর্ধ্বে নন তার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন।
দ্বিতীয়তঃ কোথা থেকে শুরু করতে হবে, কোথায় শেষ করতে হবে এবং কোন্ ধারা অবলম্বন করে অগ্রসর হতে হবে? একমাত্র সন্তোষজনক ধারাবাহিকতা হচ্ছে কুরআনের ধারাবাহিকতা, যেভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু একটি সিলেবাস সেই ধারাবাহিকতার পরিবর্তন এড়াতে পারে না। কোন্ মানদন্ডের ভিত্তিতে? আবার সেটা অবশ্যই বিধি-বহির্ভূত হবে। যে কোন একটি ধারাবাহিকতা অনেক সময় প্রয়োজনীয় ধারাক্রমের মধ্যে একটি বিকল্প হতে পারে। আপনি এভাবেও অগ্রসর হতে পারেন, প্রথমে কুরআনের মর্যাদাকে আল্লাহর অবতীর্ণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুন। অতৎপর বিশ্বজগতের প্রমাণগুলোর সাথে পরিচয় করুন। নিজের ব্যক্তিসত্তা ও ইতিহাসের সাথে পরিচিত হওয়া আল্লাহ, আখিরাত ও রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি বিশ্বাস, ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক মর্যাদা, মুসলিম জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, ঈমান এবং জিহাদের ডাক, আল্লাহর প্রতি প্রতিশ্রুতি ও শপথ পূরণ করা। অথবা কেউ ইচ্ছা করলে মৌলিক বিশ্বাস থেকে শুরু করতে পারেন। যা আমি এখানে উল্লেখ করেছি, যা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পরিবর্তন হতে পারে। ইসলামের আশীর্বাদ সম্পর্কে পাঠককে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে শুরুতেই। পাঠকের জীবনের লক্ষ্য, আল্লাহর প্রতি তাদের শপথের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হবে। এটা আমার সেই উপলব্ধির উপর ভিত্তি করে আল্লাহ তা‘আলা সূরা আল বাকারায় ক্ষতিগ্রস্ত মুসলিমদের প্রতি যেভাবে ভাষণ দিয়েছিলেন।
প্রত্যেক চক্র শুরু হবে একথা আলোচনা করে যে, কিভাবে কুরআন পড়তে ও বুঝতে হয়। এজন্য এই বইটি সহায়ক হওয়া উচিত।
সূরা আল ফাতিহা সম্পর্কে একটি বিশেষ কথা। কুরআন শরীফের মধ্যে এ সূরাটি এক অসাধারণ স্থান দখল করে আছে। কুরআনের অতীব প্রয়োজনীয় অর্থের সবকিছুই এ সূরায় আছে। আপনি প্রতিদিন এটি অনেক বার পড়েন। সুতরাং এটি প্রত্যেক সিলেবাসের অংশ হওয়া উচিত। কিন্তু এর অধ্যয়ন থেকে সত্যিকারের উপকার পেতে হলে একজন শিক্ষানবীসের জন্য একজন ভালো শিক্ষক অথবা তাফসীর গ্রন্থের সাহায্য নেয়া প্রয়োজন হবে। নির্ধারিত অংশের বিনিময়ে হলেও যেখানেই এ ধরনের সাহায্য পাওয়া যাবে এটাকে অবশ্যই সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
কুরআন মাজীদের শেষ দিকের সংক্ষিপ্ত সূরাসমূহ যা আপনি দৈনন্দিন নামাযে তিলাওয়াত করেন, তাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঐসব আয়াত সঠিকভাবে বুঝার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন হবে। সত্যিকার উপায়-উপকরণ যখন পাওয়া যাবে, তখন ঐসব সূরা অধ্যয়ন করতে হবে।
এখানে দুটি সিলেবাস দেয়া হয়েছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস যাতে ১২টি অংশ বাছাই করা হয়েছে, তা এক বছরের পাঠচক্র অথবা সংক্ষিপ্ত সময়ের গভীর অধ্যয়নের জন্য। যদি একজন শিক্ষক থাকেন এবং অধ্যয়নের প্রচুর সময় পাওয়া যায়, তাহলে সেটা ১২ সপ্তাহ অথবা ১৪ দিনের শিক্ষা শিবিরের জন্যও উপযোগী বিবেচিত হতে পারে। এমনকি আরও সংক্ষিপ্ত সময় যেমন ৫-৭ দিনের সিলেবাস উদ্ভাবনের জন্য এটা কাজে লাগতে পারে।
প্রত্যেক বাছাইকৃত অংশের জন্য কিছু বড় বড় দিক উল্লেখ করা হয়েছে আপনি যা দিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে পারেন। কিছু কুরআনী নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে যাতে করে আপনি তার আলোকে চিন্তা করতে পারেন। এসব রেফারেন্স আমার নিজস্ব উপলব্ধির ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে, যা কোনোক্রমেই ব্যাপক নয়। আশা করা যায় যে, আপনি নিজেই উদ্যোগ নিতে পারবেন এবং সে সময়ের মধ্যে ঐসবের সাথে আপনার পরিচিত হয়ে যাবে। দীর্ঘ সিলেবাসটি দেয়া হয়েছে এক বছরের জন্য সাপ্তাহিক পাঠচক্রের উপযোগী করে।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসঃ ১২টি নির্ধারিত অংশ
মাসিক পাঠচক্রের জন্য ১ বছরের কোর্স
(১) সূরা হাজ্জঃ ৭৭-৭৮
চিন্তা করুনঃ বন্দেগী ও আনুগত্যের জীবন জিহাদে পূর্ণতা, শাহাদাতের মিশনে কেন্দ্রীভূত মুসলিম হওয়ার উদ্দেশ্য, নামায, যাকাত ও রোযার উপকরণসমূহ।
১.১ রুকু ও সিজদাঃ ইবাদাত ও আনুগত্যের কর্ম নামায, বিশেষভাবে রাত্রীকালীন নামায, মনের অবস্থা, আচরণের অবস্থা, ব্যক্তিগতভাবে ও প্রকাশ্যে- ২: ১২৫, ১৬: ৪৯, ২: ৪৩, ৭৬: ২৬, ৩৯ : ৯, ৭৭ : ৪৮, ৫ : ৫৫. ৯৬ : ১৯. ৯ : ১১২, ৪৮ : ২৯, ২ : ৫৮।
(১.২) ইবাদাতঃ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হিসেবে, আল্লাহর মূল বাণী, পরিপূর্ণ আনুগত্য ও আত্মসমর্পণ সমগ্র জীবনের পরিব্যাপ্ত, সকল মিথ্যা আল্লাহ থেকে ফিরে আসা- ৫১: ৫৬, ১৬ : ৩৬, ২১: ২৫, ৪ : ৩৬, ৩৯ : ১১, ৪০: ৬৬, ১২ : ৪০।
(১.৩) কল্যাণঃ অন্তর থেকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে – ৮: ৭০, ২: ২৬৯, ২: ১৮০, ৭৩: ২০, ৯৯ : ৭।
(১.৪) জিহাদঃ এর দাবী - ৪৯ : ১৫, ৮ : ৭৪, ৩: ১৪২, ৯ : ১৯-২২, ৪ : ৯৫-৯৬, ৬১ : ১১, ৯ : ৪১-৪৫, ৯: ২৪।
(১.৫) শাহাদাতের মিলনের জন্য বাছাই হওয়া সম্পর্কে- ২: ১২৮-১২৯, ২ : ১৪৩, ৬: ১৬১-১৬৪, ৩:৬৫-৬৮।
(১.৬) তাওহীদ সম্পর্কে হযরত ইবরাহীমের দৃষ্টান্ত, আনুগত্য, ত্যাগ- ৬ : ৭৯, ৬০: ৪, ২: ১৩১।
(১.৭) দীন- ৫: ৩-৬, ২ : ১৮৫, ৪ : ২৬-২৮।
(১.৮) শাহাদাতের মিশন- ২ : ২১৩, ৩৩: ৪৫, ৫: ৬৭, ৪৮ : ৮, ৩ : ১৮৭, ৪ : ৪১, ২ : ১৫৯-১৬৩, ১৭৪-১৭৬।
(১.৯) নামাযঃ গুরুত্ব, কায়েমের জন্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক শর্ত - ২ : ৩, ১৯ : ৫৯, ৭০ : ২৩,. ৩৪: ২, ২৩৮: ৪, ১০২:৩, ২: ২৩৯, ২৯ : ৪৫, ৭: ২৯, ২৩ : ২, ৪ : ৪৩, ১৭ : ৭৮, ৪ : ১৪২, ২ : ৩৪, ৭ : ৩১, ৬২ : ৯-১১, ১৯ : ৫৫, ১৭৭: ১-৭, ২২: ৪১।
(১.১০) যাকাতঃ গুরুত্ব এবং তাৎপর্য - ৪১- ৬-৭, ৯ - ৫, ৩০-৩৯, ৯ : ১০৩।
(১.১১) রোযা- ৩ : ১০১, ৩১ : ২২, ২৬ : ৭৭-৮২।
(২) সূরা আল বাকারাঃ ৪০-৭
চিন্তা করুনঃ হিদায়াতের আশীর্বাদ স্মরণ করুন এবং অন্যান্য, আল্লাহর প্রতি ওয়াদা পূরণ, ঈমানের নবায়ন, আল্লাহর বাণীর বিনিময়ে সামান্য সুবিধা লাভের ব্যবসায়ে সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে ফেলা এবং বিকৃত করা, সত্য গোপন করা, নামায, যাকাত, ইবাদাতে এবং বাইরে সামষ্টিক জীবন, মুনাফিকী এবং দ্বিমুখী নীতি, সবর ও নামায নৈতিক শক্তি হিসেবে।
(২.১) নিয়ামত - হিদায়াতে ,প্রকৃতিতে ও ইতিহাসে- ৫ : ৩, ২ : ১৫০, ৫ : ৭, ১৬ : ১৮, ৩ : ১০৩, ৮ : ২৬, ৫ : ২০।
(২.২) ওয়াদা - ৭ : ১১, ৪৮ : ৮-১০, ৭ : ১৭২, ৩৬ : ৬০, ৩৩ : ২১-২৪, ৫ : ১২-১৩, ৩ : ৭৬-৮৬।
(২.৩) আল্লাহর পক্ষ থেকে দরকষাকষি ইহকালে ও পরকালে- ৩ : ১-৩৯, ২৪ : ৫৫, ৫ : ৬৬, ৪ : ৬৬-৯।
(২.৪) ঈমান নবায়নের আহবান- ৪ : ১৩৬-১৩৯, ৫৭ : ৭-১৬, ৪ : ৬০-৬১।
(২.৫) ঈমানের বিনিময়ে দুনিয়াবী লাভ - ৫ : ৪৪, ২ : ১৭৪-১৭৬।
(২.৬) সত্যকে মিথ্যা দিয়ে আচ্ছাদিত করা- ২ : ৭৫, ৭৮, ৭৯, ৪০, ৪১, ৯১, ৯৪, ১০২, ১১১, ১১৩, ৫ : ১৮।
(২.৭) সত্য গোপন - ২ : ১৫৭-১৬৩, ১৭৪-১৮৬।
(২.৮) নামাযের গুরুত্ব, মাসজিদে জামায়াতে নামায হচ্ছে ইসলামী জামায়াতের মূল কথা - ১৮ : ২৮, ৯ : ১৬-১৭, ২৪ : ৩৬, ২ : ১১৪, ৯ : ১০৭-১০৮।
(২.৯) কথায় এবং কাজে অসামঞ্জস্য, বিশেষ করে দাওয়াতী কাজের ক্ষেত্রে- ৬১ : ২-৩, ৬৩ : ১-৪।
(২.১০) আল্লাহর সাথে প্রতিশ্রুতি পালনের মূল অবলম্বন সবর ও নামায- ২ : ১৫৩-১৫৭, ৪১ : ৩৫, ৪৬ : ৩৫, ৭ : ১০৭, ৮ : ৪৩, ৩ : ১২৫, ৮ : ৬৫-৬৬।
(২.১১) আল্লাহর নিকট ফিরে আসার ব্যাপারে সতর্কতা ও নিশ্চয়তা- ৫২ : ৪৮।
(৩) সূরা মুয্যাম্মিলঃ ১-১০ ও ২০
চিন্তা করুনঃ রাত্রির নামাযে কুরআন তিলাওয়াত, যিকর, তাবাত্তুল, তাওয়াক্কুল, সবর, সালাত, যাকাত, ইনফাক, ইস্তিগফার।
(৩.১) কিয়ামুল লাইল-৩২ : ১৫-১৬, ৩৯ : ৯-২৩, ৫১ : ১৫-১৯, ১৭ : ৭৮-৮২।
(৩.২) তাসবীহ - ২০ : ২৪-৩৩।
(৩.৩) তাযকিয়ার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে যিকর-সর্বাবস্থায়, বিভিন্নভাবে, অন্তরে, ভাষায়, দৈহিকভাবে, কর্মে, দাওয়াতে এবং জিহাদে-৮৭ : ১৫, ৩ : ১৯১, ১৩ : ২৮, ৩৯ : ২২-২৩, ৬২ : ৯, ২ : ১৫০-১৫৫।
(৩.৪) তাওয়াক্কুলঃ তাৎপর্য ও প্রয়োজনীয়তা - ৮ : ২-৪, ৬৫ : ৩, ১১ : ১২৩, ১২ : ৬৭, ২৫ : ৫৮, ১৪ : ১২।
(৩.৫) ইয়াফুলুনের বিভিন্নরূপ- ৩৪ : ৮, ২১ : ৫, ২৫ : ৪-৫, ৭, ৬৮ : ৮-১৫, ১৭ : ৯০-৩, ১০ : ১৫, ১৭ : ৭৩।
(৩.৬) করযে হাসানা এবং আল্লাহর পথে খরচ - ৫৭ : ১১-১৬, ৯২ : ১৮-২১, ২৩ : ৬০, ২ : ২৬৪-৭৪, ৩ : ৯২, ৪ : ৩৮, ৫৭ : ১০, ৬৩ : ১১, ৩৫ : ২৯।
(৩.৭) ইসতিগফার আল্লাহর বাণীর মূল কেন্দ্রবিন্দু, সতর্কতা, বাছাই, জবাবদিহি, ত্রুটি স্বীকার, প্রত্যাবর্তন, ইহলোক ও পরলোকের পুরস্কার- ৪ : ১১০, ৩ : ১৫-১৭, ৩ : ১৩৩-১৩৬, ৩ : ১৪৬-১৪৮, ৭১ : ৭-১২, ৩৯ : ৫৩, ৬৪ : ১৭।
(৪) সূরা আল হাদীদঃ ১-৭
চিন্তাকরুনঃ প্রত্যেকটি জিনিস আল্লাহর গৌরব ঘোষণা করছে, সমস্ত রাজত্ব তাঁর, তিনি জীবন ও মৃত্যুর মালিক, তাঁর ক্ষমতা সবার উপর, তাঁর জ্ঞান সর্ববিষয়ে, তাঁর সার্বভৌমত্ব ও শাসন সবার উপর, কালের উপর, মানুষের অন্তরে কি আছে তাও তিনি জানেন, এর আলোকে ঈমানের আহবান এবং আল্লাহর পথে খরচ।
(৪.১) আল্লাহর গুণাবলী - ২২ : ১৮, ১৭ : ৪৪, ১০ : ৩১, ৬, ৫৯ : ৬১, ৩ : ১৫৪, ২৮ : ৭০-৭২, ২ : ২৫৫, ৫৯ : ২২-২৪, ৩ : ২৫-২৬।
(৫) সূরা আন নাহলঃ ১-২২
চিন্তা করুনঃ বিশ্বে এবং নিজের মধ্যে তাওহীদ, রিসালাত ও আখিরাতের প্রমাণ। মানুষ, পৃথিবী, জান্নাত, প্রাণীকূলের সৃষ্টির উদ্দেশ্য, পানি বর্ষন, ফসল ফলানো, রাত্রি ও দিন, সূর্য, চন্দ্র, তারকা, নানা বর্ণ, সমুদ্রে খাদ্য ও সম্পদ, তারকার মাধ্যমেদিক, নির্দেশিকা।
(৫.১) প্রমাণ, বিভিন্ন অনুচ্ছেদে - ৩০ : ১৭-২৭, ২৭ : ৫৯-৬৮, ১০ : ১-১০, ৩১ : ৬।
(৬) সূরা ইয়াসীনঃ ৫০-৬৫
জীবনের বিভিন্ন স্তরে পথ পরিক্রমা সম্পর্কে চিন্তা করুন। মৃত্যু ও জীবনের শেস মুহূর্ত, মহাধ্বংস বা কিয়ামতের দিন, আবার জাগ্রত হওয়া, বিচার পুরস্কার ও শাস্তি।
(৬.১) আখিরাত ৫০ : ১৬-৩৫, ৭৫ : ২০-৩০, ১৮ : ৪৭-৯, ২০ : ১০০-১১২, ২২ : ১-৭, ২৩ : ৯৯-১১৮, ৪৩ : ৬৬-৮০, ৪৪ : ৪০-৫৯, ৫১ : ১-২ ৭।
(৭) সূরা আল হাদীদঃ ২০-২৫
চিন্তা করুনঃ বর্তমান জীবনের বাস্তবতা ও প্রকৃতি। আল্লাহ ও রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্য শক্তি প্রয়োগ।
(৭.১) বর্তমান ও ভবিষ্যতের জীবন - ৩ : ১৪-১৫, ১০৫, ১০ : ২৪, ১৮ : ৪৫, ৪ : ১৩৪, ১৭ : ১৮-১৯, ৪২ : ১৯-২০।
(৭.২) ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা - ৪ : ১৩৫, ৬১ : ৯-১৪।
(৮) সূরা আল আনকাবুতঃ ১-১০
চিন্তা করুনঃ ঈমানের পরীক্ষা ও সাফল্য লাভের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগের অপরিহার্যতা।
(৮.১) দেখুন - ২ : ১৫৫, ২ : ২১৪, ৩ : ১৪০-২, ৩ : ১৭৯, ৪৭ : ২৯-৩১।
(৯) সূরা আল আনফালঃ ৭২-৭৫
ঈমানের সাথে হিজরাত ও জিহাদের গভীর সম্পর্কের কথা চিন্তা করুন। জিহাদের জন্য সামষ্টিকতার অপরিহার্যতা।
(১০) সূরা আত্ তাওবাঃ ১৯-২৪
ভেবে দেখুনঃ আল্লাহর মিশনের পূর্ণতার জন্য সামষ্টিক জীবনের মূলভিত্তি হচ্ছে অনুগত্য ও নবীর ডাকে সাড়া দেয়া।
(১০.১) দেখুন - ৮ : ২০-২৮, ৪৯ : ১-৫, ৫৮ : ১১-১৩, ৯ : ৪২-৫৭, ৯ : ৬২-৬৬, ৯ : ৮১-৮২, ৬২ : ৯-১১।
(১১) সূরা আলে ইমরানঃ ১৯০-২০০
একটি পূর্ণাঙ্গ সারসংক্ষেপঃ আল্লাহ, আখিরাত, রিসালাত, জান্নাত ও পৃথিবীর সৃষ্টি, দিন-রাত্রির আবর্তনের প্রমাণ, সর্বদা আল্লাহর স্মরণে জীবন পরিচালনা, পরকালই চূড়ান্ত লক্ষ্য আল্লাহর প্রেরিত নবীর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস, সংগ্রাম ও পরীক্ষার তাৎপর্য, সামষ্টিক জীবনের হিদায়াত।
এটা ধরে নেয়া হয়েছে উপরে উল্লিখিত সিলেবাসটি একটি বড় কোর্সের অংশ হিসেবে অধ্যয়ন করা হবে। আর এজন্যই মুসলিম জীবনের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক গুণাবলী সম্পর্কে কোন কিছুই এতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। তা যদি না হয়, তাহলে নিম্নোক্ত অংশটুকু যোগ করে নিলে বেশ উপকারে আসবে।
আল ইসরা - ১৭ : ২৩-৩৯, আল ফুরকান - ২৫ : ৬৩-৭৭, লুকামন - ৩১ : ১২-১৯, আল হুজরাত- ৪৯ : ১০-১৪।
দীর্ঘ সিলেবাসঃ ৪০টি অংশ
সাপ্তাহিক পাঠচক্রের জন্য ১ বছরের কোর্স
১) সূরা আল হাজ্জ : ৭৭-৭৮ : জিহাদ ও বন্দেগীর জীবন, শাহাদাতের মিশন।
২) সূরা আত্ তাওবা : ১১১-১১২ : ঈমানের অংগীকার বন্দেগীর জীবন।
৩) সূরা আন নিসা : ১৩১-১৩৭ : ন্যায়বিচারের সাক্ষ্য, ঈমানের ডাক।
৪) সূরা আলে ইমরান : ১০২-১১০ : উম্মাহর উদ্দেশ্য।
৫) সূরা আল ফাতহ : ৪-১১ : নবীর মিশন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার।
৬) সূরা আল বাকারা : ৪০-৪৬ : অঙ্গীকার পূরণের আহবান।
৭) সূরা মুয্যাম্মিল : ১-১০, ২০ : আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা।
৮) সূরা আল ইসরা : ২৩-৩৯ : ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক নৈতিকতা।
৯) সূরা আন নাহল : ১-১১ : তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাতের প্রমাণ।
১০) সূরা আন নাহাল : ১২-২২ : তাওহীদ, রিসালাত, আখিরাতের প্রমাণ।
১১) সূরা ইউনুস : ৩১-৬ : তাওহীদের প্রমাণ ও হিদায়াত।
১২) সূরা হাজ্জ : ১-৭ : আখিরাতের প্রমাণ।
১৩) সূরা কাহাফ : ১-১৮ : আখিরাত।
১৪) সূরা আল মুমিনুন : ১১৮ : আখিরাত।
১৫) সূরা ইয়াসীন : ৫০-৬৫ : আখিরাত।
১৬) সূরা ক্বাফ : ১৯-৩৫ : আখিরাত।
১৭) সূরা আয্ যুমার : ৫৩-৫৬ : আখিরাতের প্রস্তুতি।
১৮) আল হাশর : ১৮-২৪ : আখিরাতের প্রস্তুতি ও আল্লাহর গুণাবলী।
১৯) আল হাদীদ : ১-৭ : আল্লাহর গুণাবলী, ঈমান এবং আল্লাহর পথে খরচের আহবান।
২০) আল হাদীদ : ১২-১৭ : ঈমান ও ইনফাক।
২১) আল হাদীদ : ২০-৫ : বর্তমান জীবন, ইনফাক, ন্যায় প্রতিষ্ঠা।
২২) সূরা আস্ সাফ : ৯-১৪ : নবীর মিশন, ইমান ও জিহাদের প্রতি আহবান।
২৩) সূরা আল আনকাবুত : ১-১১ : বিশ্বাসের পরীক্ষা।
২৪) সূরা আল আনফাল : ৭২-৫ : ঈমান, হিজরাত, জিহাদ, জামায়াত।
২৫) সূরা আন নিসা : ৯৫-১০০ : হিজরাত ও জিহাদ।
২৬) সূরা আত্ তাওবা : ১৯-২৪ : জিহাদ, সর্বোচ্চ আমল, সবকিছু ত্যাগ করা।
২৭) সূরা আত্ তাওবা : ৩৮-৪৫ : জিহাদ।
২৮) সূরা আলে ইমরান : ১৬৯-৭৫ : আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ।
২৯) সূরা আল বাকারা : ২৬১-৬ : ইনফাক ফী সাবীল্লিাহ।
৩০) সূরা আল বাকারা : ২৬৭-৭২ : ইনফাক ফী সাবীলিল্লাহ।
৩১) সূরা আল আনফাল : ২০-৯ : সামষ্টিক জীবন, আনুগত্য।
৩২) সূরা আন নিসা : ৬০-৭ : সামষ্টিক জীবন, আনুগত্য।
৩৩) সূরা আন নূর : ৪৭-৫২, ৬২-৪ : সামষ্টিক জীবন, সাড়া এবং আনুগত্য।
৩৪) সূরা আল হুজরাত : ১-৯ : সামষ্টিক জীবন, নেতৃত্বের সাথে সম্পর্ক।
৩৫) সূরা মুজাদালা : ৭-১৩ : সামষ্টিক জীবন, নিয়ম-নীতি ও দায়িত্ব।
৩৬) সূরা আল হুজরাত : ১০-১৫ : সামষ্টিক জীবন, আন্তঃব্যক্তি সম্পর্ক।
৩৭) সূরা আল মুরসালাত : ৩০-৬ : দাওয়াত এবং প্রয়োজনীয় গুণাবলি।
৩৮) সূরা আল বাকারা : ১৫০-৬৩: মিশন এবং এর দায়িত্ব।
৩৯) সূরা আলে ইমরান : ১৮৫-৯২ : সারমর্ম।
৪০) সূরা আলে ইমরান : ১৯৩-২০০ : সারমর্ম।
৪০টি অংশ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২ সপ্তাহের জন্য। ধরে নেয়া হয়েছে যে, কোন কোন সপ্তাহ বাদ যাবে না। কোন কোন অংশ শেষ করতে একাধিক সপ্তাহ লেগে যাবে।
যাই হোক যদি সহজলভ্য হয়, তাহলে কুরআনের ইতিহাস সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর দিকে মনোনিবেশ করা যেতে পারে, যা আমি এখানে অন্তর্ভূক্ত করিনি। এ ব্যাপারে প্রতি সপ্তাহের জন্য একজন করে নবী যেমন নূহ (আ) অথবা হূদ (আ) সম্পর্কে অধ্যয়নের জন্য গ্রহণ করা যেতে পারে। সূরা আল আরাফের একেটি অনুচ্ছেদের উপর ভিত্তি করে এ প্রসঙ্গে কুরআনের প্রমাণিত আয়াতসমূহ নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
১. আল আরাফঃ ৫৯-৬৪
২. আল আরাফঃ ৬৫-৭২
৩. আল আরাফঃ ৭৩-৯
৪. আল আরাফঃ ৪০-৪
৫. আল আরাফঃ ৪৫-৯৩
৬. আল আরাফঃ ৯৪-১০২
৭. সূরা হূদঃ ১১৬-২৩।