স্ত্রী কিংবা মা হওয়াটাই জান্নাতে যাওয়ার একমাত্র পথ নয়

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক বোনকে একবার প্রশ্ন করেছিলাম, “আপনি এই বিষয়ে মেজর করছেন কেন?” দীর্ঘ এক নিশ্বাস ফেলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “সত্যি বলতে কি, আমি আসলে কী পড়ছি সে ব্যাপারে মোটেও চিন্তিত নই। আমি আমার বিয়ের জন্য অপেক্ষা করছি, যাতে স্ত্রী আর মা হতে পারি।”

অবাক বিস্ময়ে ভাবি,“স্ত্রী কিংবা মা হতে চাওয়াটা অবশ্যই চমৎকার কিছু। কিন্তু সেজন্য জীবনকে কেন থামিয়ে রাখতে হবে?” শিক্ষিত ও দক্ষ একজন নারী কেন তার আত্ম-উন্নয়নের পথে বাধা তৈরি করবেন? স্ত্রী কিংবা মা হওয়ার মতো গুরুদায়িত্ব যখন এখনো পর্যন্ত তার উপর চাপেনি, তখন সমাজ পরিবর্তনের পথে কেন তিনি নিজেই নিজের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখবেন? স্ত্রী কিংবা মা হওয়া নিশ্চয় এক অসাধারণ রহমত। কিন্তু বিয়ের আগেই কেন বাস্তব সুযোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন? কখন বিয়ে হবে তার প্রহর গুনবেন?

আরেকজন বোন বললেন, “আমার বয়স ইতোমধ্যেই ২৬ হয়ে গেছে। বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। মা-বাবা আমার বিয়ের জন্য পাগল হয়ে গেছেন। তারা ভাবছেন আমার হয়তো আর কখনো বিয়ে হবে না। তারা প্রতিনিয়ত আমাকে চাপ দিচ্ছেন। আমার মা’র বান্ধবীরা বারবার তাকে তাগাদা দিচ্ছেন যে আমার বয়স বেড়েই চলেছে। আমার মা এজন্য আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। বলেন, তিনি মনে হয় আর নানী হতে পারবেন না। ব্যাপারটা এমন না যে আমি বিয়ে করতে চাই না। কলেজে পড়ার সময় থেকেই আমি এর জন্য তৈরি। কিন্তু আমি আসলে আমার জন্য উপযুক্ত পাত্র খুঁজে পাচ্ছি না।”—বলতে বলতে কেঁদেই দিলেন বোনটি।

বিয়ের জন্য নারীদের যেভাবে চাপ দিই, ইসলামি শিক্ষা অর্জনের জন্য আমরা কেন নারীদের সেভাবে চাপ দিই না? কিংবা উচ্চ শিক্ষার জন্য? অথবা জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে যা তারা ভবিষ্যতে পারিবারিক জীবনে বাস্তবায়ন করবে এবং যা তাদের সাহায্য করবে? হয়তো এটা এজন্যই যে, আমরা নারীদের ক্ষেত্রে এই ধারণায় আচ্ছন্ন হয়ে আছি যে, নারীরা বিয়ে করবে, মা হবে— যদি তারা তা করতে না পারে তবে তারা হয়তো সত্যিকার সাফল্য অর্জন করতে পারল না।

স্ত্রী ও মা হওয়ার মর্যাদা ইসলামে কত বেশি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা জানি বিয়ে মানুষের দীনের অর্ধেক পূরণ করে [১]। নবী (সা) মা-এর মর্যাদার ব্যাপারে বলেছেন, “[...]  তার পা'র নিচে জান্নাত।” [২] কিন্তু বিয়ে করা এবং মা হওয়াটাই জান্নাতে যাওয়ার একমাত্র পথ নয়। আর প্রতিটা পরিণত নারীই স্ত্রী কিংবা মা নন। আর তা হবেও না। কিছু নারী আল্লাহর অনুগ্রহে স্ত্রী কিংবা মা বা উভয়টিয় হবেন। অন্যদেরকে আল্লাহ হয়তো অন্যান্য সুযোগ দিয়ে তাঁর অনুগ্রহে শামিল করবেন।

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা কেবল স্ত্রী কিংবা মা হওয়ার জন্য নারীদের সৃষ্টি করেননি। এটা আমাদের প্রথম কিংবা শেষ উদ্দেশ্যও নয়। আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে এক বিশেষ উদ্দেশ্যে: তাঁর বান্দা হওয়ার জন্য। সূরাহ্‌ আয-যারিয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার ইবাদতের উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছি।” [৩]

ইবাদাত বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। গৃহিণী  হওয়াটা এক প্রকার ইবাদাত হতে পারে। গৃহিনী-মা হওয়াটা এক প্রকার ইবাদাত হতে পারে। অবিবাহিত ছাত্রী হওয়াটাও ইবাদাত হতে পারে। তালাকপ্রাপ্ত নারী ডাক্তার, নারী সাংবাদিক, নারী ইসলামী স্কলার, চলচ্চিত্র পরিচালক, রাধুঁনী (পেস্ট্রি শেফ), শিক্ষক, পশুচিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক, আইনজীবি, শিল্পী, সেবিকা, কুর’আন শিক্ষক, মনরোগ বিশেষজ্ঞ, ফার্মাসিস্ট এর প্রত্যেকটিই হতে পারে একেক ধরনের ইবাদাত। সুকন্যা হওয়াটাও হতে পারে ইবাদাতের একটি ধরণ। বিভিন্নভাবে আমরা আল্লাহর ইবাদাত করতে পারি। শুধু খেয়াল রাখতে হবে ইবাদাতের নিয়্যাতটা যেন আন্তরিক হয়। এবং যা করছি সেটা যেন আল্লাহর দেওয়া নির্দেশনা মেনে করা হয়।

তবে, দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের সমাজ অবিবাহিত অথবা ডিভোর্সী নারীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে না। আমি যখন সমাজের বিভিন্ন নারীদের সাথে কথা বলি, আমি তাদের প্রশ্ন করি কীভাবে তারা সমাজে ভূমিকা রাখতে চায়, কীভাবে তাদের সময় ও সামর্থ্যকে ব্যবহার করতে চায়। তাদের বড় একটা অংশ আমাকে এই উত্তর দেবে যে, এ ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা নেই। তারা কেবল স্রোতের অনুকূলে গা ভাসাচ্ছে। আর উপযুক্ত পাত্রের জন্য অপেক্ষা করছে, যাদের সঙ্গে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

তবে উপযুক্ত অনেক মুসলিম নারীর জন্যই উপযুক্ত পাত্র দ্রুত কিংবা সহজে আসে না। অনেকের জন্য হয়তো আসে। কিন্তু সে সম্পর্ক পরে হয়তো সুসামঞ্জস্যপূর্ণ না-হয়ে জঘন্য রূপ নেয়। কুমারী কিংবা তালাকপ্রাপ্ত, সামর্থ্যবান ও বুদ্ধিমতী প্রায় প্রতিটি মুসলিম নারীকেই এ কথা শুনতে হয়, “তো কখন তোমার বিয়ে হবে? তোমার বয়স তো দিন দিন বাড়ছে। বয়স বেড়ে গেলে বাচ্চা নেওয়া সমস্যা।”

বিয়ে করার জন্য এবং বাচ্চা নেওয়ার জন্য আমাদের সমাজে নারীদেরকে ক্রমাগত যে-পরিমাণ যন্ত্রণা, চাপ ও হতাশাকে মোকাবিলা করতে হয় সেটা আমাদের ধর্মের কথা নয়।

ইসলাম নারীদের জ্ঞানী হওয়ার অধিকার দিয়েছে। আমাদের ইতিহাসে এমন অনেক নারীদের খুঁজে পাওয়া যাবে যারা ইসলাম শিক্ষার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আপনি কি ফাতিমাহ সা‘দ আল-খাইরের নাম শুনেছেন? ৫২২ সালে জন্ম নেওয়া এই নারী ছিলেন একজন ‘আলিমাহ। তাঁর বাবা সা‘দ আল-খাইরও ছিলেন ‘আলিম। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ক্লাস নিতেন। বিশেষ করে তাঁর মেয়েরা যেন হাদীস ক্লাসে অংশ নেয় সে ব্যাপারে বেশ যত্নবান ছিলেন তিনি। তিনিই তাদেরকে বিভিন্ন শিক্ষকদের কাছে বারবার নিয়ে যেতেন। তিনি নিজেও তাদের শেখাতেন। [৪] ফাতিমাহ্‌ বিখ্যাত ‘আলিম আত-তাবারানির কর্মসমূহের তৎকালীন শীর্ষ বর্ণনাকারীর অধীনে অধ্যয়ন করেছেন। আপনি কি জানেন কে ছিলেন সেই শীর্ষ বর্ণনাকারী? তাঁর সময়ের শীর্ষ বর্ণনাকারী কোন পুরুষ ছিলেন না। ফাতিমাহ্‌র সময়কার শীর্ষস্থানীয় ‘আলিমাহ ছিলেন একজন নারী যার নাম ছিলো ফাতিমাহ আল-জুযাদনিয়্যাহ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই তাঁর কাছে শিখতে যেতেন, কারণ তাঁর সময়ে ক্ল্যাসিকাল কিছু টেক্সটে তিনি ছিলেন সবচাইতে বিখ্যাত এবং জ্ঞানী।[৫]

ফাতিমাহ সা‘দ আল-খাইর এক পর্যায়ে বিয়ে করে দামাস্কাসে চলে যান। সেখান থেকে কায়রোতে যান এবং সেখানেই শিক্ষকতার কাজ চলতে থাকে। অনেক জ্ঞানী ব্যক্তিরাই তাঁর শহরে সফরে যেতেন শুধু তাঁর কাছ থেকে জ্ঞান অন্বেষণের জন্য।[৬]

ফাতিমাহ এমন এক পরিবারে বেড়ে উঠেছিলেন যারা নারী শিক্ষা ও জ্ঞানকে মূল্য দিয়েছিল: এতটাই যে কিশোরী বয়স থেকেই ফাতিমাহ যেন বিভিন্ন ‘আলিমদের কাছ থেকে জ্ঞান অন্বেষণ করতে পারেন সেটা নিশ্চিত করেছিলেন তাঁর বাবা। বিয়ের আগে তাঁকে বলা হয়নি যে শুধু ঘরে বসে থাকুক। সমাজ থেকে নিষ্ক্রিয় থাকুক এই আশঙ্কায় যে, কোনো পুরুষের কাছে হয়তো শিক্ষিত নারীকে অনাকর্ষণীয় লাগবে। ভয়ঙ্কর মনে হবে। ফলে বিয়ে করতে চাইবে না। তাঁর অবস্থা এমন ছিল না যে, বিয়ের আগে ঘরে পড়ে ছিলেন বলে দায়সারাভাবে পড়াশোনা করে গেছেন। তিনি জ্ঞান অন্বেষণ করেছেন, আর আল্লাহও তাঁকে তাঁর সমমর্যাদার স্বামী দিয়ে অনুগৃহীত করেছিলেন। তাঁর স্বামী তাঁর যোগ্যতার সঠিক মর্যাদা দিয়েছিলেন। বুঝেছিলেন তাঁর কাজের স্পৃহা। আর তাই বিয়ের পরও শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সবসময় সমর্থন জুগিয়ে গেছেন। তিনি এমন এক সম্পদ আমাদের জন্য রেখে গেছেন দুর্ভাগ্যজনকভাবে যে ব্যাপারে আমরা অধিকাংশই জানি না। আমরা জানি না হাদীসের উপর বিশেষজ্ঞ ৮ হাজারেরও অধিক নারীদের কথা যারা আমাদের ইতিহাসেরই অংশ। [৭]

কেন আমরা কখনো ফাতিমাহ আল-খাইর কিংবা তাঁর মতো হাজারো নারী ‘আলিমাহ্‌দের ব্যাপারে শুনিনি? আমার মতে এর একটা কারণ হচ্ছে, আমাদের সমাজে নারীদেরকে স্ত্রী ও মা হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে আমরা এতটাই নিবদ্ধ যে, ওটাই যে আমাদের প্রথম কাজ নয় সে ব্যাপারটা আমাদের নজর থেকে সরে যায়।

আল্লাহর আনুগত্য করা আমাদের প্রথম কাজ। কীভাবে সর্বোত্তমভাবে তাঁর ইবাদাত করা যায় সে ব্যাপারে আল্লাহ প্রদত্ত সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত।

ইসলামের ইতিহাস এমন সব নারীদের উদাহরণে ভরপুর যেখানে দেখা যায়, অনেক নারীরা স্ত্রী এবং মা ছিলেন, এবং তারা কেবল তাদের সেই দায়িত্বের প্রতিই পরিপূর্ণ নিবদ্ধ ছিলেন। তাঁদের ঘর থেকেই জন্ম নিয়েছে ইমাম আহমাদের মতো মহান মহান ‘আলিমগণ।[৮] সমাজে আমরা কেবল এসব উদাহরণগুলোই নিই এবং এসব মহান নারীদের অভিজাত মর্যাদাকে বারবার তুলে ধরি।

কিন্তু আমাদের ইতিহাসে এমন অনেক নারীই ছিলেন, যারা কেবল স্ত্রী কিংবা মা ছিলেন না। ছিলেন দুটোই, কোনো একটি অথবা কোনোটাই না। কিন্তু তারপরও আল্লাহ তাদেরকে যেসব প্রতিভা ও দক্ষতা দিয়ে অনুগৃহীত করেছিলেন সেগুলোর সদ্ব্যবহার করে তাঁর সৃষ্টির সেবা করে তাঁর ইবাদাত করে গেছেন। তারা মানুষকে তাঁর দীনের দিকে ডেকেছেন। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে গেছেন উত্তম আদর্শ। কিছু নারী ছিলেন যারা স্ত্রী ও মা ছিলেন, এবং সে হিসেবেই তাদের পারিবারিক দায়িত্ব পালনের প্রতি পরিপূর্ণ নিবদ্ধ ছিলেন। অন্যদিকে কিছু নারী এমন ছিলেন যারা অন্যভাবে সমাজের সেবা করেছেন।

নারী মুহাদ্দিসের অভিধান বিষয়ক গ্রন্থ ‘আল-মুহাদ্দিসাত’-এর ভূমিকায় শাইখ মুহাম্মাদ আকরাম নাদভী উল্লেখ করেছেন, “যে ৮০০০ নারী হাদীস বিশেষজ্ঞের ব্যাপারে তিনি গবেষণা করেছেন তাদের কেউই পারিবারিক জীবনের দায়িত্বকে ছোটো মনে করেননি। কিংবা সেই দায়িত্বকে অবহেলা করেননি। নারী হওয়ায় পুরুষের চেয়ে নিজেদের কোনো অংশে ছোটো মনে করেননি। সামর্থ্য ও প্রতিভা থাকার পরও তারা এমনটা ভাবেননি যে, পারিবারিক জীবনের বাইরে তাদের আর কোনো দায়িত্ব নেই।” [৯]

আমাদের ইতিহাসে যেসব নারীরা ‘আলিমাহ ছিলেন এবং যাদের পরিবার ছিল তারা দুটো দায়িত্বই সমানভাবে পালন করেছেন। তাদের জীবনে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল। আর সেটা কেবল স্ত্রী কিংবা মা হওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তো এখনো যাদের বিয়ে হয়নি তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কী দাঁড়ায়? অনেক সিঙ্গল নারীরা তাদের সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করছেন। নিজেদের সামর্থ্য ও দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে উম্মাহ্‌র অগ্রগতির পথে ভূমিকা রাখছেন। তাদের সামর্থ্যকে বিনিয়োগ করছেন আল্লাহর প্রতি ‘ইবাদাতের জন্য। আরও ভালো কিছুর জন্য নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছেন। আমরা কি এদের উদাহরণ হিসাবে নিতে পারি না?

আল্লাহ তাঁর প্রজ্ঞা অনুযায়ী নারী ও পুরুষকে আলাদাভাবে সৃষ্টি করেছেন। দিয়েছেন আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। কেউ কেউ তা উপলব্ধি করে। ফলে সে যে পর্যায়েই থাকুক না কেন তা নিয়ে অসন্তুষ্ট হয় না। নিজেদের প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ ঘটায়। আল্লাহ আমাদের যে-সময় ও সামর্থ্য দিয়েছেন আসুন আমরা তার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের ইবাদাতকে বাড়িয়ে তুলি। সমাজ ও মানবতার সার্বিক উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত করি। এগুলো করতে করতেই যদি আমরা স্ত্রী কিংবা মা হয়ে যাই, তাহলে অন্তত বলতে পারব স্ত্রী বা মা হওয়ার আগে আমরা আমাদের সব সামর্থ্য তাঁর ইবাদাতের তরে নিয়োজিত করেছিলাম। আর স্ত্রী কিংবা মা হওয়ার পরও আমরা আমাদের অর্জিত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তাঁর ইবাদাতে রত থাকতে পারি। অর্জন করতে পারি উৎকৃষ্টতা।

যেসব অভিভাবক, পরিবার ও সমাজ নারীদেরকে ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকে বলছি: আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হোন যে তিনি আপনাকে মেয়ে সন্তান দিয়েছেন। হোক না সে বিবাহিত কিংবা অবিবাহিত। নবী (সা) বলেছেন, “কন্যাদের প্রতি বিমুখ হবে না। কারণ তারা হচ্ছে মূল্যবান রত্ন, যারা তোমাদের হৃদয়ে স্বস্তি এনে দেয়।” [১০] আমাদের বোনেরা মানসিকভাবে যতটুকু চাপ সহ্য করতে সক্ষম, আমরা তাদেরকে তার চেয়ে অনেক বেশি চাপ প্রয়োগ করছি। আসুন আমরা তাদেরকে একটু সুযোগ করে দিই যাতে তারা আল্লাহর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক মজবুত করতে পারে।

আল্লাহর ইবাদাতের জন্যই তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। এটাই আমাদের প্রথম কাজ। আসুন, এখন আমরা আমাদের কাজ করি। খুঁজে বের করি- কীভাবে আমরা সেই উদ্দেশ্যকে যথাযথভাবে পালন করতে পারব, যে উদ্দেশ্যে আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে।

সূত্রসমূহ

[১] আল-বায়হাকি

[২] আন-নাসা’ই

[৩] কুর’আন, ৫১:৫৬

[৪] নাদভী, মুহাম্মাদ আকরাম, আল-মুহাদ্দিসাত, ইন্টারফেস পাবলিকেশনস, (২০০৭): পৃষ্ঠা ৯৩।

[৫] প্রাগুক্ত

[৬] নাদভী, মুহাম্মাদ আকরাম, আল-মুহাদ্দিসাত, ইন্টারফেস পাবলিকেশনস, (২০০৭): পৃষ্ঠা ৯৫।

[৭] নাদভী, মুহাম্মাদ আকরাম, আল-মুহাদ্দিসাত, ইন্টারফেস পাবলিকেশনস, (২০০৭)।

[৮] দ্যা কোড অফ স্কলারস, মুহাম্মাদ আশ-শারীফ। ঈমান রাশ, ২০০৮। সিডি।

[৯] নাদভী, মুহাম্মাদ আকরাম, আল-মুহাদ্দিসাত, ইন্টারফেস পাবলিকেশনস, (২০০৭): পৃষ্ঠা ১৫।

[১০] আল-হায়সাম, মাজমা আল-যাওয়াইদ, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ২৮৬, আল-মুহাদ্দিসাতে উদ্ধৃত।

সূত্রঃ VirtualMosque.com